ভালবাসার শেষ প্রহর

রপেটে ভাত খেয়ে একটা ঘুম দিবো ভাবছিলাম, এমন সময় ডোরবেল বেজে উঠলো। 

একরাশ বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলতেই, একজন মেয়ে মিষ্টি গলায় জিজ্ঞাসা করলো, ভাইয়া সাদিয়া কি বাসায় আছে? 

আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন সাদিয়া?

মেয়েটি মুচকি হেসে উত্তর দিল:

-সাদিয়া আমার বড় বোনের মেয়ে। খুবই দুষ্টু।সারাদিন এইদিক সেদিক ছুটে বেড়ায়।সকাল থেকে খুজে পাচ্ছিলাম না তাই ভাবলাম বুঝি আপনাদের বাসায় এসেছে।ও আচ্ছা আপনার সাথে তো পরিচয়ই হল না। আমরা গতকালই নতুন এসেছি আপনাদের বিল্ডিং এ। আমি জোহার । আপনি? 

-আমি হা করে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন।

মেয়েটি আমার চোখের সামনে হাত নাড়ালো। আর জিজ্ঞেস করলো ভাইয়া কি হল আপনার?

-ঘোর ভাঙতেই আমি বললাম,আমি ইবনুল।

ঠিক তখনই সাদিয়া এসে পেছন থেকে জোহারকে  খালামনি বলে জড়িয়ে ধরলো।তখন মেয়েটি বললো,

-খুব বেশি দুষ্ট হয়েছো না? নতুন জায়গায় আসতে না আসতেই তোমার পাকনামো শুরু। 

আমি তখন বললাম থাক ওকে বকবেন না। ওকে আমার বাসায় পাঠিয়ে দিবেন মাঝেমাঝে । আরহাম এর সাথে খেলাধুলা করবে। 

-আরহাম কে ভাইয়া? 

-আরহাম হল আমার বড় ভাইয়ের ছেলে। আমাদের সবার খুব আদরের। এই দেখুন না কথা বলতে বলতে আপনাকে ভেতরেই আসতে বলা হল না। ভেতরে আসুন না । সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই?

-আজ থাক ভাইয়া। অন্য একদিন আসবো। 

এই বলে মেয়েটি আজকের মত চলে গেল।এরপর থেকে প্রায়ই মেয়েটি আমাদের বাসায় আসতো সাদিয়াকে নিয়ে। বাসার সবার সাথে এমন ভাবে মিশে গিয়েছিল যেন আমাদের পরিবারেরই একজন।মাঝেমধ্যে বিকেলে ছাদে দেখা হত। মেয়েটি বই পড়তো। আর আমি চায়ে চুমুক দিতে দিতে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম।আমি আস্তে আস্তে অনুভব করতে লাগলাম আমি ওকে ভালবাসি। ভালই কাটছিল দিন গুলো। সামনেই ১৪ই ফেব্রুয়ারি। ভাবলাম সেদিনই তাকে ভালোবাসার কথা জানাবো।কিন্তু হঠাত যা শুনলাম তার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।জোহারের ক্যান্সার।  সে এই পৃথিবীতে আর অল্প কিছুদিনের মেহমান হঠাত যেন আকাশটা মাটিতে ভেঙে পড়লো।


আপনি যদি এই ব্লগে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমার বাকি লিখা গুলো পড়ে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কেমন লাগলো। আপনার মন্তব্য আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ। 😊


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

If you have any suggestions please let me know. It will be my pleasure to know your opinions. 😊