কল্পনারীর সাক্ষাত (পর্ব-২)

পর্ব- ২

সকাল ৫.৫৯!
.

রিয়ানের মোবাইলের এলার্ম বাজা শুরু করলো। প্রত্যেক বছর এই একটি দিনে বরাবর এই সময় এলার্ম বাজে। অবশ্য তার একটি বিশেষ কারণ ও আছে। আজ রিয়ানের জন্মদিন। ছোটবেলায় মায়ের কাছে শুনেছিল তার জন্ম নাকি ৫.৫৯ মিনিটে হয়েছিল। তাই সে প্রত্যেক বছর এই সময়টাতেই ঘুম থেকে উঠে যায় এবং কিছুক্ষণ নীরবে সময় কাটায়।
.

রিয়ান জন্মদিন পালন করা পছন্দ করে না। কেন জানি তার কাছে এসব বিরক্ত লাগে। তার কাছে জন্মদিন মানে উৎসবের উপলক্ষ নয়। বরং মৃত্যুর দিকে আরো একটু এগিয়ে যাওয়া। তাই বন্ধুরা অনেক বার রিয়ানের জন্মদিন পালন করার চেষ্টা করেও পারে নি। তবে হ্যাঁ একটা জিনিস সে পছন্দ করে। জন্মদিনের উইশ পেতে। রিয়ানের ফ্রেন্ড সার্কেল এতটা সমৃদ্ধ নয়। হাতে গুনা কয়েকজন ফ্রেন্ড আছে। তারাই সব সময় উইশ করে। তবে এদের মধ্যেও স্পেশাল কেউ একজন আছে। যার কল কিংবা মেসেজ এর জন্য সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে প্রতি বছর। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আর তার মেসেজ কিংবা কল কিছুই আসে না। আজও সে যথারীতি অপেক্ষা করছে। যার জন্য অপেক্ষা সে কিন্তু রিয়ানের সেই কল্পনারী নয়। রিয়ানের কলেজ লাইফের ফ্রেন্ড। একমাত্র ফ্রেন্ড। যার সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারণে যোগাযোগ বন্ধ সেই এডমিশন টেস্টের পর থেকে।




.

আমি রিয়ানের কাছে গেলাম আর উইশ করলাম। আর বললাম-

-কিরে? আর কতদিন এভাবে অপেক্ষা করে থাকবি?
-যতদিন না সাফরিন যোগাযোগ করে।
-তুই নিজে একটা কল করে খোজ নিলেই তো পারিস।
-না দোস্ত। সেই মুখ আমার নেই।
-তুই ওর কোন খোজ খবর জানিস এখন?
-জানবো না কেন? ও এখন মেডিকেলে পড়ে। অনেক বন্ধু বান্ধব এখন ওর। তাছাড়া ফেসবুকে তো দেখিই রেগুলার। ওই পাগলিটা আমার কোন খবর রাখে বল?
-কি বলিস? ফ্রেন্ডলিস্টেও আছে। কিন্তু কথা হয় না?
-কথা হয় না ঠিক। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে একবার প্রোফাইল ঘুরে আসা হয় ঠিকই।
-আচ্ছা। এমনও তো হতে পারে ও তোর একটা নক কিংবা কল এর জন্য অপেক্ষা করে আছে? তোর মত সাফরিনও প্রতিদিন তোর প্রোফাইল থেকে এসে ঘুরে যায়? এভাবে চিন্তা করে দেখেছিস কখনো?
-না, কখনোই না। আমাকে হয়ত ওর আর মনেই নেই।


চলবে.......

আপনি যদি এই ব্লগে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আমার বাকি লিখা গুলো পড়ে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কেমন লাগলো। আপনার মন্তব্য আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ। 😊


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ